স্মার্ট মনির

SMART MONIR

   INSTITUTE CODE: EIIN:

কোড়কদী(KARAKDI), মধুখালী(MADHUKHALI), ফরিদপুর(FARIDPUR)
Email: islammonirul858@gmail.com | Mobile: 01912550095
Web: https://www.smartmonir.com/

  ব্রেকিং নিউজ  

  ***   বাংলাদেশ তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি মন্ত্রনালয়ের আইসিটি ডিভিশন,ঢাকা এর A2i জেলা অ্যাম্বেসেডর শিক্ষক নির্বাচিত হওয়ায় জনাব মনিরুল ইসলাম,সহকারি শিক্ষক(বিজ্ঞান) কে ---কাজী সিরাজুল ইসলাম গার্লস স্কুল এন্ড কলেজ এর পক্ষ থেকে অনেক অনেক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন....   ***     ***   ঢাকা বিভাগের শ্রেষ্ঠ শিক্ষক নির্বাচিত হওয়ায় ২৬, নভেম্বর ২০২৪ ইং কাজী সিরাজুল ইসলাম গার্লস স্কুল এন্ড কলেজ, আড়পাড়া(আমার শিক্ষা পরিবার) কর্তৃক গণসংবর্ধনা প্রদান করে   ***     ***   ঢাকা বিভাগের শ্রেষ্ঠ শিক্ষক নির্বাচিত হওয়ায় ২৩, নভেম্বর ২০২৪ ইং তারিখে ফরিদপুর খেলাঘর কর্তৃক গুণীজন সম্মাননা প্রদান করে   ***     ***   বিভাগীয় পর্যায়ে গুণী শিক্ষক নির্বাচিত হওয়ায় মধুখালী উপজেলার শিক্ষা পরিবার কর্তৃক সম্মাননা স্মারক গ্রহণ   ***     ***   ঢাকা বিভাগের “গুণী শিক্ষক” নির্বাচিত   ***     ***   .....ফরিদপুর জেলার শ্রেষ্ঠ শ্রেণি শিক্ষক (মাধ্যমিক ) এর পুরষ্কার গ্রহণ...   ***     ***   .....ফরিদপুর জেলার শ্রেষ্ঠ শ্রেণি শিক্ষক (মাধ্যমিক ) এর পুরষ্কার গ্রহণ...   ***     ***   উপজেলা পর্যায়ে শ্রেষ্ঠ শ্রেণি শিক্ষক পুরষ্কার গ্রহণ   ***     ***   জাতীয় শিক্ষা সপ্তাহ -২০২৪   ***     ***   ফরিদপুর জেলার শ্রেষ্ঠ শ্রেণী শিক্ষক নির্বাচিত   ***  
আমার জন্মভূমি

আমার জন্মভূমি

  গুরুত্বপূর্ণ লিংক

ইতিহাস ঐতিহ্যে আমার জন্মভূমি 

   
খুঁজে পাওয়া কোড়কদী

================================

 

 

 

১৮৬৯ সালে কলকাতা থেকে প্রকাশিত হয়েছিল উপন্যাস ’রশিনারা’। ’দুর্গেশ নন্দিনী’ প্রকাশের মাত্র চার বছরের মাথায় প্রকাশিত সেই উপন্যাসটির লেখকের বাড়ি ফরিদপুরের কোড়কদী জানলে সে গ্রাম নিয়ে আগ্রহী না হয়ে পারা যায়?

ঢাকা-খুলনা মহাসড়কে মধুখালী পার হয়ে দই আর মিষ্টিখ্যাত বাগাট থেকে ডান দিকে নেমে গেছে ইটের যে হেরিংবোন আর কাঁচা রাস্তা তা দিয়ে কিলো দুয়েকের ভেতরেই বাংলার অন্য আর সব গ্রামের মতোই কোড়কদীও একটি।

 

এক সময় ‘ছোট  কলকাতা’ হিসেবে পরিচিত ছিল গ্রামটি। এ গ্রামে জন্মেছিলেন উঁচু মাপের বেশ কয়েকজন মানুষ।

 

১৯১১ সালে মোহনবাগান ক্লাবের অধিনায়ক শিবদাস ভাদুড়ী, তেভাগা আন্দোলনের শীর্ষস্থানীয় নেতা অবনী লাহিড়ী, পন্ডিত অবন্তী কুমার সান্যাল, নবাঙ্কুর-এর লেখিকা সুলেখা সান্যাল, বিপ্লবী রাজনীতিক শ্যামেন্দ্রনাথ ভট্টাচার্য,  বরেণ্য নৃত্যশিক্ষক অজিত সান্যাল প্রমুখের বাড়িও এই গ্রামেই। সব যেন হারিয়ে গিয়েছিল বিস্মৃতির অতলে।

 

২০১০ সালের ৩০ জানুয়ারি ইতিহাস পুনরুজ্জীবিত হয় এক বিশাল সমাবেশের মধ্য দিয়ে। আর তারপর থেকে কোড়কদীর মানুষ প্রতি বছর ওই দিনে সভা করেন, আলোচনা চলে অঞ্চলের ঐতিহ্য আর ইতিহাস নিয়ে।


দিনটিকে ঘিরে তিন দিনব্যাপী মেলাও চলছে গত বছর থেকে। সে এক হই হই রই রই ব্যাপার।

গ্রামের শুরুতেই ১৯০১ সালে প্রতিষ্ঠিত রাসবিহারী বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয় এখনো দাঁড়িয়ে। খানিক ভেতরে ভেঙে ঝুরঝুরে হয়ে গেছে ‘রামধন তর্কপঞ্চানন লাইব্রেরি’ ভবনটি। ওই দুটি প্রতিষ্ঠান দেখলে স্পষ্ট হয়, কীভাবে ওই গ্রামে ১৯২০-৩০ দশকের দিকেও ৩০/৪০ জন বিএ/এমএ পাস মানুষ ছিলেন। ঐতিহাসিকরা বলছেন, মধ্যযুগের বৃহৎ বাংলার সংস্কৃত শিক্ষার প্রধান প্রতিষ্ঠানগুলোর তালিকায় ছিল কোড়কদীর নাম। ১৯২৪ সালে ভারতের পূর্ণিয়া থেকে প্রকাশিত সমালোচনামূলক গ্রন্থ মহাভারত-মঞ্জরীর লেখক ছিলেন এই কোড়কদীর মানুষ। কোড়কদীর মেয়ে মৃদুলা ভট্টাচার্য এ গ্রামে নারী আন্দোলন পরিচালনা করতেন। গ্রামের মেয়েরা কোঁদাল কেটে পুকুর করেছিলেন স্বদেশি যুগে।

কোড়কদী বাংলাদেশের আটষট্টি হাজার সাধারণ গ্রামের একটি। খুঁজলে যে বাংলাদেশের অনেক গ্রামই  বারদী  বা বিক্রমপুরের মতো ঐতিহ্যশালী, তা কোড়কদী নিয়ে কাজ করতে গিয়ে আমরা বুঝেছি। কোড়কদী গ্রামের সামগ্রিক ইতিহাস ও ঐতিহ্য আমাদেরকে এত বেশি আপ্লুত করেছিল যে আমরা দুই বছর আগে সেখানে একটি সমাবেশ আয়োজনের করি। সমাবেশে কোড়কদীর কৃতী মানুষদের উত্তর প্রজন্মের প্রতিনিধিরাও যুক্ত হয়েছিলেন সে গ্রামের বর্তমান বাসিন্দাদের সঙ্গে। সে মিলনমেলা ছিল ফরিদপুর জেলার এক ঐতিহাসিক ঘটনা, যেখানে জেলার বিপুল সংখ্যক বুদ্ধিজীবী ও পেশাজীবী এসে যুক্ত হয়েছিলেন কোড়কদীর গ্রামতলে। সঙ্গে পেয়েছিলাম আরো অনেককে।

দিল্লি থেকে এসেছিলেন অধ্যাপক কৃষ্ণা লাহিড়ী মজুমদার, কুচবিহার থেকে নাট্যকার অলোক ভট্টাচার্য প্রমুখ। আর ঢাকা থেকে আসেন প্রয়াত অধ্যাপক মোজাফফর হোসেন, অধ্যাপক মেসবাহ কামাল, সাংবাদিক মোজাম্মেল হোসেন ও আবু সাঈদ খান, ড. মো. জাহাঙ্গীর হোসেন, সংগীতশিল্পী অধ্যাপক এম এ আজিজ মিয়াসহ বাসভর্তি একগাদা তরুণকর্মী। কামারখালী থেকে এলেন প্রাবন্ধিক আজাহারুল ইসলাম, শিক্ষক শেখর সাহা, আলী নেওয়াজ শায়েস্তা খানসহ আরো কতো কতো জন। ফরিদপুর শহর থেকে অধ্যাপক আলতাফ হোসেন আর রিজভী জামানসহ আরও অনেকের উপস্থিতি বিস্ময়কর উপলব্ধি দিয়েছে সেবার।

কোড়কদী সমাবেশে আমন্ত্রণ জানিয়ে মধুখালী পার হয়ে বাগাটের আগেই সুসজ্জিত তোরণ সাজানো হয়েছিল। বাস ছেড়ে সবাইকে উঠতে হল মিনিবাসে। কাঁচা রাস্তা দিয়ে মানুষের ঢল নেমেছিল সেদিন। কোড়কদী রাসবিহারী হাই স্কুলের শিক্ষার্থীরা রাস্তার দুপাশে দাঁড়িয়ে ফুলের পাপড়ি ছুঁড়ে শুভেচ্ছা জানিয়েছিল।

কী বিশাল জনসমাবেশ! প্রশস্ত মাঠের চারপাশে বসেছিল গ্রামীণ মেলা। ফরিদপুরের সাহিত্য-সংস্কৃতিকর্মীরা দিয়েছিলেন স্টল। সাজিয়েছিলেন রবীন্দ্রনাথের চিত্র, বীরশ্রেষ্ঠদের ছবি। এ বিরান প্রান্তরে এমন আয়োজনের কৃতিত্বের প্রশ্নে আবু সাঈদ মিয়া আর অধ্যক্ষ কাজী ফিরোজের নাম ছিল মানুষের মুখে মুখে। মাইকে অধ্যক্ষ ফিরোজের দরাজ কণ্ঠ মন্ত্রমুগ্ধ করে রেখেছিল দশ ঘন্টার সেদিনকার সমাবেশকে।

বিষয়টি ক্রমে এমন বিপুলতায় রূপ নিয়েছিল যে, স্থানীয় প্রশাসন, স্থানীয় সরকার কেউ আর বাইরে থাকেনি। নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযু্ক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য ড. সঞ্জয় কুমার অধিকারী, কোড়কদী স্কুলের কৃতী সন্তান  ডা. মাসুদ-উল  হক মুন্সী ওরফে মুন্সী বেলাল, এলাকার প্রবীণ রাজনীতিক মুন্সী হারুন সকলেই নিয়মিত খোঁজখবর করতে থাকলেন। সামগ্রিক কাজে পাশে থাকলেন ঢাকাকেন্দ্রিক আমার বর্তমান কর্মকাণ্ডের কয়েকজন ঘনিষ্ঠ মানুষ যেমন কবি চঞ্চল শাহরিয়ার, জাহিদুল ইসলাম শাহ্, নাজমুল হোসেন, মোঃ জাহাঙ্গীর আলম সরকার, বরুণ কুমার বিশ্বাস, লাজিনা হোসেন, মোঃ হাবিবুর রহমান প্রমুখ।

ঢাকার অতিথিরা ইতিহাস-অনুসন্ধানের আবশ্যিকতা নিয়ে বক্তৃতা করেছিলেন। এলাকার প্রবীণরা করেন স্মৃতিচারণ। অবনী লাহিড়ীর দুই মেয়ে কৃষ্ণা আর অপলা এবং শ্যামেন্দ্রনাথ ভট্টাচার্যের ছেলে অলোক যা বলেছিলেন তাতে ভিজে উঠেছিল উপস্থিত কয়েক সহস্র মানুষের চোখ। সাংসদ মোঃ আবদুর রহমানের ভাষণ দিয়ে যখন বক্তৃতা পর্ব শেষ হয়েছিল তখন সন্ধ্যা গড়িয়েছে। কিন্তু দর্শক শ্রোতাদের যেন বিরক্তি নেই।

এরপর ছিল সাংস্কৃতিক  পর্ব। আকরাম খান আর শ্যামল পাল পালন করেছিলেন অগ্রণী ভূমিকা। যখন সাংস্কৃতিক পর্ব শেষ হলো, ঘড়ির কাটা রাত দশটা পার করছে।
আর যারা দূর দূরান্ত থেকে এসেছিলেন হয়তো তারা কোড়কদী সম্পর্কে ভাসা ভাসা জ্ঞানকে খানিকটা হলেও পূর্ণতা দিতে পেরেছিলেন। কোড়কদী সমাবেশ আমাদের সকলকে করেছিল দেশের ইতিহাস-ঐতিহ্যের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। আগ্রহী করেছিল হারিয়ে যাওয়া ঐতিহ্যের অনুসন্ধানে। শিখিয়েছিল বাংলার সাধারণ মানুষ ধর্ম-বর্ণ-বয়স-লিঙ্গ নির্বিশেষে কেমন সম্মিলিত প্রয়াস গ্রহণ করতে পারে একটি সৎ প্রয়াস সফল করার জন্য।

ঢাকায় কোড়কদীকে উপস্থাপন করতে আমাদের সাহিত্য সংগঠন বাংলাদেশ লিটারারি রিসোর্স সেন্টার (বিএলআরসি) উদ্যোগ নিয়েছিল সমাবেশের আগের দিন ঢাকায় একটা প্রেস কনফারেন্সের। ২৯ জানুয়ারি সে কনফারেন্স হয়েছিল জাতীয় প্রেস ক্লাবে। সংবাদ মাধ্যমের বিপুল সংখ্যক কর্মীর উপস্থিতি সেখানে আয়োজকদের ভীষণভাবে উৎসাহিত করেছিল। বিচারপতি মোহাম্মদ গোলাম রাব্বানী যখন বলেছিলেন ‘আসুন আমরা দেশের ইতিহাস-ঐতিহ্যকে জানি। কোড়কদী দিয়ে শুরু হোক সে যাত্রা’ তখন উপস্থিত অনেকেই উদ্বেলিত বোধ  করেছিলেন।

বাংলাদেশ কোড়কদীর মতো শত সহস্র গ্রামের সম্মিলন। অভাব যেটা তা হলো সে সব গ্রামের প্রাচীনতা ও কৃতিত্ব সামগ্রিকতার আলোকে উপস্থাপিত হয় না। কিন্তু কোড়কদীর সে উপস্থাপন সম্ভব হয়েছে। আর তাই ৩০ জানুয়ারি এলেই সে গ্রামে সাজ সাজ রব পড়ে যায়। গতবার পড়লেও এবারে ভাটা পড়েছে। কোনো রাজনৈতিক কারণেই কোড়কদীর বিকাশ রুদ্ধ হওয়া উচিত নয়।
ভবিষ্যত বছরগুলোতে কোড়কদী ২০১০ সালের অনুরূপ উপস্থাপনায় প্রকাশিত হবে বাংলাদেশের হাজার হাজার গ্রামের সঙ্গে সে প্রত্যাশা থাকলো।

সংগৃহীত 

  CONTACT US
ALL
  অন্যান্য লিঙ্ক

CONTACT


Copyright © 2022 All Right Reserved | Powered by : RAUD